বুধবার, ০৬ অগাস্ট ২০২৫, ০৪:১১ পূর্বাহ্ন

ফরিদপুর জেলার পুলিশ সুপারের প্রেস ব্রিফিং

মো:সামাদ খান, ফরিদপুর প্রতিনিধি ॥
ফরিদপুর জেলা পুলিশের ‌ প্রেস ব্রিফিং।জেলার কোতয়ালী থানাধীন গোসাই ভাবুকদিয়া গ্রামে চাঞ্চল্যকর ডাকাতি মামলার মূল রহস্য উদঘাটন ওআন্তঃজেলা ডাকাত চক্রের ০৬ সদস্য গ্রেফতার ও লুণ্ঠিত মালামাল উদ্ধার সংক্রান্তে আজ বুধবার সকালে ফরিদপুর পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে উক্ত প্রেস ব্রিফিং এ সাংবাদিকদের বিভিন্ন তথ্য প্রদান করেন ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মোর্শেদ আলম।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সালাউদ্দিন , অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শৈলেন চাকমা, কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ‌ মোঃহাসানুজ্জামান টি আই তুহিন লস্কর।এ সময় ফরিদপুরের বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

এতে জানানো হয় গত ১৪ জুন ২০২৪ রাত অনুমান ১.৪৫ মিনিটহতে ৩.৪৫ মিনিটের মধ্যে অজ্ঞাতনামা আসামীরা ফরিদপুর কোতয়ালী থানাধীন কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের গোসাই ভাবুকদিয়ার মাধুরী রানী সরকার (৪০) এর বসতঘরের দরজা ভেঙে রুমে ঢুকে বিভিন্ন জিনিসপত্র ডাকাতি করে নিয়ে যায়।পুলিশ সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে কিছু আলামত জব্দ করে। এই ঘটনায় অজ্ঞাতনামা আসামীদের বিরুদ্ধে কোতয়ালী যানায় একটি ডাকাতি মামলা রুজু হয়।

মামলা রুজুর পর পুলিশ সুপারের দিক নির্দেশনায়, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, সদর সার্কেল, ফরিদপুর, অফিসার ইনচার্জ কোতয়ালী থানা, ফরিদপুরের নেতৃত্বে গুপ্তচর নিয়োগ ও তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় ঘটনায় জড়িত আসামীদের সনাক্ত করে, তাদের গ্রেফতার ও মালামাল উদ্ধারের জন্য কোতয়ালী থানার একটি চৌকস দল অভিযান শুরু করে।ডাকাত চক্রের সদস্যদেরকে তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় তাদের সনাক্ত ও তাদের অবস্থান চিহ্নিত করা হয়।

এরই ধারাবাহিকতায় গত ২৫ জুন রাতে কোতয়ালী থানার একটি আভিযানিক দল আসামী ১। মোঃ কবির হোসেন (৪৩), ২। সাইফুল ইসলাম ওরফে সাঈদ (৩২), ৩। হৃদয় (৩৫) দের নারায়নগঞ্জ জেলার আড়াইহাজার থানা এলাকা হতে গ্রেফতার করা হয়। তাদের তথ্যমতে আসামী ৪। মোঃ সাইফুল ইসলাম (২৭), ৫। ফরহাদ হোসেন (৩২), কে শরীয়তপুর জেলার ডামুডয়া থানা এলাকা হতে এবং অপর আসামী ৬। আতিয়ার শেখ (৩৮) কে ফরিদপুর জেলার কোতয়ালী থানার ‌ পরমানন্দপুর এলাকা হতে গ্রেফতার করা হয়। তাদের কাছ থেকে ডাকাতিতে লুণ্ঠিত মালামাল ও ডাকাতি কাজে ব্যবহৃত আলামত উদ্ধার করা হয়।

গ্রেফতারকৃত আসামীদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে তারা পেশাদার ডাকাত চক্রের সদস্য। এই আন্তঃজেলা ডাকাত চক্রটি নেতৃত্ব দেয় আটক আসামী মোঃ কবির হোসেন (৪৩)
ও অন্য একজন সদস্য তদন্তের স্বার্থে তার নামটি গোপন রাখা হয়েছে)। তারা গত ১৩ জুল ডাকাতি করার উদ্দেশ্যে ঢাকা যাত্রাবাড়ি এলাকা হতে একটি পিকআপে করে ফরিদপুরের উদ্দেশ্যে রওনা করে। অপরদিকে গ্রেফতারকৃত আসামী আতিয়ার ও অন্য একজন (তদন্তের স্বার্থে তার নামটি গোপন রাখা হয়েছে) স্থানীয়ভাবে তাদের সহযোগীতা করে।

গ্রেফতারকৃত আতিয়ার ডাকাতি করার বাড়িটি ডাকাতি করার পূর্বে রেকি করে। তারা যাত্রাবাড়ি থেকে ৮/৯জন ও আতিয়ারসহ গত ১৩/জুন রাত ১১.৩০ মিনিটে রওনা করে ঘটনাস্থল গোসাই ভাবুকদিয়ায় ১৪ জুন . রাত অনুমান ০১.৪৫ মিনিটে পৌঁছায় এবং তারা বাদীর বসতবাড়িতে ঘরের দরজা ভেঙে প্রবেশ করে প্রায় ১ ঘন্টা সময় নিয়ে ডাকাতি করে। ডাকাতি শেষ আনুমানিক ০৩.৩০ মিনিটের সময় তারা দ্রুত পিকআপ যোগে পালিয়ে নারায়নগঞ্জ চলে যায়। তারা বিভিন্ন জায়গায় দীর্ঘদিন যা একইভাবে বসতবাড়ি ও মহাসড়কে ডাকাতি করে আসছে। তারা ডাকাতিতে আসা-যাওয়ার সময় ট্রাকে এমনভাবে অবস্থান করে রাত চেকপোস্টে আটকালে তারা নিজেদের মালামাল নামানো-
ওঠানোর শ্রমিক হিসেবে পরিচয় দেয়। তাদের প্রত্যেকের নামে একাশি ডাকাতি মামলা রয়েছে। ডাকাত চক্রের বাকি সদস্যদের চিহ্নিত করা হয়েছে। তাদেরকে অবিলম্বে গ্রেফতার করা হবে।ঘটনায় জড়িত বাকী আসামীদের গ্রেফতার ও ডাকাতি হওয়া অন্যান্য মালামাল উদ্ধারের জন্য অভিযান অব্যাহত আছে।

উল্লেখ্য যে, গত ১০ জুল তারিখে কোতয়ালী থানাধীন গোসাই ভাবুকদিয়া এর পাশের গ্রাম পরমানন্দপুরে বাদী পান্না বেগম (৩৮), স্বামী-আক্তার মোল্যা, গ্রাম-
পরমানন্দপুর, থানা- কোতয়ালী, জেলা- ফরিদপুর এর বসতবাড়িতে একই ধরনের ডাকাতি সংঘটিত হয়। যার মামলা নং-৩২, তারিখ- ১১/০৬/২৪ ধারা-৩৯৫/৩৯৭ পেনাল কোড, কোতয়ালী থানা, ফরিদপুর। মামলা তদন্ত করছেন মোঃ আমজাদ হোসেন তালুকদার, পুলিশ পরিদর্শক (নিঃ), কোতয়ালী থানা, ফরিদপুর। প্রাথমিকভাবে ‌ গ্রেপ্তার কৃত চক্রটি এই মামলার সাথে জড়িত বলে ধারনা করা হচ্ছে। আটক আসামীদেরকে বিজ্ঞ আদালত হতে রিমান্ড মঞ্জুর করে জিজ্ঞাসাবাদ করে বিষয়টি নিশ্চিত হলে তাদেরকেএ মামলায় গ্রেফতার দেখানো হবে এবং লুণ্ঠিত মালামাল উদ্ধার করা হবে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2024  Ekusharkantho.com
Technical Helped by Curlhost.com